News

আইআইইউসিতে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল লেকচার

আইআইইউসিতে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল লেকচার

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে (আইআইইউসি) অনুষ্ঠিত হলো বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল লেকচার।

বুধবার (১১ মে) বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে সকাল ১১টায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রিসার্চ সেন্টার ফর ইসলাম এন্ড ইন্টাররিলিজিয়াস ডায়ালগ (বিআরসিআইআইডি) বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল লেকচার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আইআইইউসি’র উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ। এ সময় তিনি বলেন, ‘ইসলামের যে সার্বজনীনতা মুহাম্মদ (স.) এর পর থেকে শুরু হয়েছিল তা একাদশ, দ্বাদশ শতাব্দীতে এসে হোচট খেয়েছে কিনা ভাবতে হবে। বর্তমানে সময়ের সবকিছু দ্রুততার সাথে পরিবর্তন হচ্ছে। তাই অতীতের সীমিত শিক্ষাকে ভুলে গিয়ে নতুন আঙ্গিকে গবেষণা করতে হবে, শিখতে হবে। পশ্চিমারা দাবী করছে তারা সবদিক দিয়ে উন্নত ও সভ্য, এমনকি মানুষ হিসেবেও তারা সেরা। তা নাহলে বিশ্ব কেন পশ্চিমাদের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু আসলে কি তাই? পশ্চিমা মডেল ত্যাগ করে ইসলামিক চিন্তাকে পুনরুজ্জীবিত করার মাধ্যমে এ উপনিবেশায়ন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাতে হবে। সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ থেকে আমরা কিভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছি সে ইতিহাস ও চেতনাকে পুঁজি করে পশ্চিমা ঔপনিবেশবাদ থেকে মুক্তির জন্য কাজ করতে হবে। আমরা চাইলে জ্ঞানের ধারণা পাল্টে দিতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, তা আজকে পৃথিবীর সব বাঙালির জন্য ‘জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ’। সেই কারণে বঙ্গবন্ধু মুজিব শুধু বাংলাদেশের বাঙালিদের নেতা নন, তিনি সমগ্র পৃথিবীর সব বাঙালির নেতা।’

অনুষ্ঠানে স্পিকারের বক্তব্যে আমেরিকার সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘আধুনিক শিক্ষা ও আধুনিক বিজ্ঞানে নৈতিকতার বিষয়টিকে বিন্দুমাত্র বিবেচনায় আনা হয়নি। ফলে উন্নতির উচ্চ শিখরে অবস্থান করা সত্ত্বেও তাদের নৈতিক পদস্খলন সমাজ-সভ্যতাকে বারবার কুঠারাঘাত করছে। পারমানবিক বোমার মতো মারণাস্ত্র তৈরি করে বিশ্ব মানবতার ধ্বংসের উৎসব করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এরপরও পশ্চিমারা তাদের তথাকথিত আধুনিক শিক্ষা ও সভ্যতাকে নিরপেক্ষ ও সার্বজনীন হিসেবে উপস্থাপন করে যাচ্ছে। তাদের সৃষ্ট গণতন্ত্র, জীবনাচরকে বিশ্বের জন্য মডেল ও গ্রহণযোগ্য বলে দাবী করা হচ্ছে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় যেসব উদ্ধৃতি ও নামগুলো তাতে কোথাও মুসলিম সভ্যতা, মনীষীর নাম বা রেফারেন্স পাওয়া যায় না। অথচ বিশ্ব সভ্যতায় মুসলমানদের অবদান কোনো ভাবে অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।’

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘উপনিবেশবাদি মানসিকতা থেকে ব্রিটিশরা এমন একদল মানুষ তৈরি করতে চেয়েছিল যারা রক্ত ও বর্ণে ভারতীয় কিংবা বাঙালি, কিন্তু চিন্তা-চেতনা ও রুচিবোধে ইংরেজ হবেন। সুতরাং উপনিবেশিক এ শিকল থেকে মুক্তির জন্য ঔপনিবেশিক চিন্তা-চেতনা থেকে মুসলিম মন ও মননকে মুক্ত করতে হবে। আধুনিক জ্ঞানের আলোকে ইসলামকে যুগোপযোগী করে উপস্থাপন করতে হবে। ইসলামের সার্বজনীনতা, পরমত সহিষ্ণুতা, মানবতাবোধের বিষয়সমূহ উপস্থাপন করতে হবে।’

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মছরুরুল মওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির।

উপস্থিত ছিলেন আইআইইউসি’র নবনিযুক্ত রেজিস্ট্রার এএফএম আক্তারুজ্জামান কায়ছার, আইকিউএইসি’র পরিচালক প্রফেসর ড. দেলাওয়ার হোসাইন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআরসিআইআইডি’র পরিচালক ও ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সরওয়ার আলম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ ইফতেখার উদ্দিন।

Recent News